এ সেমিনার কক্ষে প্রবেশ করতে গেলে বাধা পায়। তাকে জানানো হয়, এ সেমিনারে অংশ নিতে হলে কোনো প্রতিষ্ঠানের সিইও হতে হবে। কোনো কলেজ পড়ুয়ার জন্য এ সেমিনার না। বিড়ম্বনায় পড়ে ছেলেটি ফোন দেয় সেমিনার উদ্যোক্তাদের। তারা এসে ছেলেটিকে স্বাগতম জানায়। আর ওদিকে সিকিউরিটি গার্ডরা হতভম্ব!
ছেলেটির নাম সুহাস গোপিনাথ। ব্যাঙ্গালোরের তথ্যপ্রযুক্তিনি
কে এই সুহাশ? এত কম বয়সে কিভাবে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করল! এমন প্রশ্ন সবার ভেতরই আসতে পারে। তার সেই গল্প সে নিজেই করেছিল এক সাক্ষাৎকারে। পরে তা একটি গল্প আকারেই অনলাইনে বিভিন্ন ব্লগে প্রকাশ পেয়েছে। অনুপ্রাণিত হওয়ার মতো এ গল্প অনুবাদ করে স্বপ্নযাত্রার পাঠকদের জন্য তুলে দেওয়া হলো।
আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। বাবা ইন্ডিয়ান আর্মিতে বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করতেন। এজন্য এয়ার ফোর্স স্কুলেই আমি পড়াশোনা শুরু করি। ছোটবেলায় থেকে এ পৃথিবীর প্রাণীকূল নিয়ে আগ্রহবোধ করতাম। কিন্তু সেই বয়সে আমার বন্ধুরা সারাদিন কম্পিউটার নিয়ে পড়ে থাকতো। তাদের কাছে গল্প শুনতাম। এই যন্ত্রটির প্রয়োজনীয়তার কথা শুনে বাবার কাছে একটা কম্পিউটার কেনার আবদার করলাম। সেই সময়টাতে কম্পিউটারের দাম অনেক বেশি ছিল। তাই কেনার সামর্থ্য বাবার ছিল না।
পরে ভাবলাম বাসার কাছে সাইবার ক্যাফে আছে, সেখানে গিয়েই কম্পিউটারের সঙ্গে পরিচিত হওয়া যাক। আমি প্রতিদিন সাইবার ক্যাফেতে যেতাম। আমি বিস্মিত হতাম। এ অদ্ভুত যন্ত্রটি দিয়ে করা যায় না এমন কিছুই যেন নেই। আমি ইন্টারনেটের সঙ্গে পরিচিত হলাম। নিজে নিজেই ব্রাউজ করা শিথলাম।
বিভিন্ন সাইটে গিয়ে ঘুরে আসতাম। তখনই হুট করেই মনে হলো, ব্রাউজ করার জন্য আমরা যে ওয়েব সাইটটি দেখতে পাই সেটা বানানোর কৌশলটা কিভাবে রপ্ত করা যায়। ব্রাউজ করেই তখন একটি ই-বুক খুঁজে পেলাম। বইটি পড়ে পড়ে হালকা কাজও করতাম।
আমি টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেখানেই কাটাতাম। কিন্তু সেই টাকার পরিমাণ অল্প ছিল বলে আরও সময় থাকতে পারতাম না। তখনই খেয়াল করলাম সাইবার ক্যাফেটি দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে। আমি এরপর সাইবার ক্যাফের মালিককে একটি প্রস্তাব দিলাম। তাদের বললাম, আমি এ সময়ে আপনার ক্যাফেতে কাজ করবো। আপনার গ্রাহকদের খেয়াল করবো। সেজন্য কোনো টাকা নয়, আমাকে অফুরন্ত সময় ফ্রি ব্রাউজিং করতে দিতে হবে।
আমার কথা শুনে মালিক প্রথমে অবাক হয়ে গেল। তিনি আমাকে কাজ করার অনুমতি দিলেন। এটাকে আমার জীবনে প্রথম কোনো ব্যবসায়ীক ডিল বলতে পারেন। যদিও এখানে টাকাটা মূল বিষয় ছিল না। মূল বিষয় ছিল আমার আগ্রহ।
সুযোগ পেয়েই আমি কাজে নেমে পড়লাম। আমি নিজেই পরীক্ষামূলকভাবে
ফ্রিল্যান্স মার্কেটে নিবন্ধন করারও বয়স হয়নি। এজন্য ওয়েবসাইট বিল্ডার ক্যাটাগরিতে আমি নিজের নাম নিবন্ধন করলাম। খুব কম খরচে আমি প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট তৈরি করে দেই। তা বানিয়ে একশ ডলার আয়ও হয়।
কিন্তু এ বয়সে আমার কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছিল না। তাই বাধ্য হয়েই বাবাকে সব বিষয়ে বলতে হলো। এর আগ পর্যন্ত বাবা কিছুই জানতেন না। বাবাকে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়টা বোঝালাম। আমার বাবা বিজ্ঞানী ছিলেন। তিনি বিষয়টি বুঝতে পেরে কিছুই বললেন না। আমাকে খুশী মনে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দিলেন।
আমার কাছে টাকা এসে পৌছালো। কিন্তু কোনোভাবেই অর্থ আমাকে টানছিল না। কারণ আমার কাছে শেখার আগ্রহটা বড় ছিল। মনে হচ্ছিল এখনও অনেক কিছু শেখার আছে। এমনও বহু ওয়েবসাইট সেসময় আমি তৈরি করেছি একদম ফ্রিতে। অনেক প্রতিষ্ঠান আমার কাছ থেকে ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করে নিয়েছে।
ধীরে ধীরে মনে হলো নিজের একটা পোর্টফোলিও থাকলে ভালো হয়। তাই নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করি। যেখানে আমার স্কিল সম্পর্কে উল্লেখ ছিল। এরপরই বহু প্রতিষ্ঠান আমার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা শুরু করে।
আমি যখন ক্লাস নাইনে পড়ি তখন কম্পিউটার কেনার টাকা জোগাড় হয়ে যায়। কিন্তু সে সময় আবার আমার বড় ভাই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শুরু করল। তাই বাবাই কষ্ট করে ভাইয়ার জন্য কম্পিউটার কিনে ফেলল। তাই আমার আর কিনতে হয়নি। তখন কিছু মজার ঘটনা ঘটে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠান আমাকে চাকরির প্রস্তাব দেয়। তখন আমার বয়স সবে ১৪।
একটি নেটওয়ার্ক সলিউশন প্রতিষ্ঠান আমাকে বলে, তোমার পড়ার সমস্ত খরচ আমরা দেব। তুমি এখানে পার্টটাইম কাজ করবে এবং পড়াশোনা করবে। কিন্তু ততদিন আমি বিল গেটস আমার আদর্শ হয়ে উঠেছে। কারও জন্য কাজ নয়, নিজেই কিছু করার ইচ্ছা আমার ভেতর তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। সেজন্য সেই চাকরির প্রস্তাব তখন গ্রহণ করিনি।
শুরুতে ফ্রিল্যান্সিংয়ে
ক্লাস নাইনের সামার ভ্যাকেশনেই ‘গ্লোবাল’ নাম দিয়ে নিজের প্রতিষ্ঠান শুরু করি। যুক্তরাষ্ট্রে এ প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন হয়। ভারতে নিবন্ধন করতে গেলে ন্যূনতম ১৮ বছর বয়স লাগে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে নিজের প্রতিষ্ঠান চালু করতে লাগে ১৫ মিনিট। আমার এক বন্ধুকে দিয়ে নিবন্ধন করাই। সে গ্লোবালের একজন বোর্ড মেম্বার।
অবাক কান্ড! আমি একটি প্রতিষ্ঠানের সিইও! আমি নিজেই অবাক হয়ে যাই। প্রথমদিন থেকেই আমি স্বপ্ন দেখি একদিন আমার প্রতিষ্ঠান হবে মাক্রোসফটের মতো বিখ্যাত।
বাবা-মাকে কিছুই জানাইনি। পুরো বিষয়টি আমি গোপন রাখলাম। কারণ তারা শুনলেই বলবেন, পড়াশোনার ক্ষতি হবে। আমি কাজ শুরু করলাম। প্রথমে ওয়েবসাইট তৈরি, অনলাইন শপিং এবং ই-কমার্স সলিউশন দিয়ে শুরু করি। আমরা অনেক প্রোগ্রামারকে পার্টটাইম জব দিয়েছিলাম। যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রচুর কাজ পেতাম তখন। মজার বিষয় ছিল, আমাদের তখনও কোনো অফিস ছিল না।
আমি খেয়াল করলাম ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অনেক বড় আইটি মার্কেট। যেটা একদমই ফাঁকা। আমি সুযোগ নিলাম। বেশ কয়েকটা স্প্যানিশ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। তারা আমাকে লিখে পাঠালো, ভারতীয়রা স্প্যানিশ ভাষায় একদম কাঁচা। তাই আমাদের কাজ দেওয়া যাবে না। কথাটা প্রচণ্ড গায়ে লাগলো। তখন আমার বয়স ১৭। এতো কম বয়সী একজন মানুষকে হারানো কঠিন। যতই শক্তিশালী হন না কেন আপনি।
আমি সঙ্গে সঙ্গে স্পেনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্র জোগাড় করলাম অনলাইনে যোগাযোগ করে। তাদের বললাম, তোমরা আমার জন্য কাজ করো। তোমাদের সফলতার ওপরই সম্মানি নির্ধারণ হবে। তারপর আমাদের আজ পেছনে তাকাতে হয়নি। একই পদ্ধতিতে আমরা ইতালির মার্কেটও ধরে ফেলি।
আমার জন্ম ৪ নভেম্বর, ১৯৮৬। আর আমার প্রতিষ্ঠান শুরু হলো যখন বয়স ১৭। আমি প্রযুক্তিকে শেখার চেষ্টা করি। আমি কখনই মনে করি না আইটি কোনো টেকনোলজি। আমি মনে করি আইটি হলো বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের টুলস। এ স্লোগান নিয়েই গ্লোবাল ধারণার জন্ম।
বলতে গেলে একটি সাইবার ক্যাফে থেকে গ্লোবাল তৈরির স্বপ্ন দেখেছিলাম। তখনও টাকাটা আমার কাছে মূখ্য ছিল না। আমি কাজ করতে চাইতাম। শিখতে চাইতাম। আগ্রহ মানুষকে বদলে দিতে পারে। জানার আগ্রহটাই বড়। টাকার পেছনে ছুটলে সারাজীবন শুধু এর পেছনেই ছুটে যেতে হয়। তাই কাজটাই আসল। নিত্যনতুন বিষয় শেখাটাই জীবনের সেরা অর্জন
Top Casinos in Las Vegas - MapYRO
ReplyDeleteLas Vegas Casinos and Gaming 사천 출장마사지 Locations. Las Vegas, 안성 출장안마 NV, United 익산 출장샵 States. The 삼척 출장안마 Tropicana Casino, 보령 출장마사지 located in Las Vegas,